হ্যালো বন্ধুরা প্রতিবারের মতো আরও একটি নতুন আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। তবে এখন থেকে কথা দিচ্ছি প্রতিদিন নিয়মিত একটি করে আর্টিকেল আপনাদেরকে প্রকাশ করব।এতোদিন একটু ব্যস্ত ছিলাম তাই আমি নিয়মিত আপনাদেরকে আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারিনি।
আজকের বিষয়টি হচ্ছে অবশ্যই আপনারা দেখতে পেরেছেন এলার্জি সম্পর্কে আজকের এই বিষয়টি হ্যাঁ এলার্জি একটি তবে এটি একটি মারাত্মক রোগের ধারন হতে পারে। এলার্জি থেকে বাচঁতে আমাদেরকে যা যা করতে হবে এবং যে কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে আমরা জানাবো। এলার্জি রয়েছে বা এলার্জি রোগে ভুগছেন তাদের জন্য খুবই উপকারী হবে এই আর্টিকেলটি।
তো চলুন বেশি কথা না হয় বলে শুরু করে দেই আজকে আর্টিকেলটি।পোষ্টসূচিঃ
এলার্জি দূর করার উপায়
অ্যালার্জি আছে, আমাদের আর্টিক্যাল এর প্রতি নয়। বলছিলাম, আমরা শরীরে যে অ্যালার্জি রোগে ভোগে সেটার কথা। অ্যালার্জি আসলে কী? অ্যালার্জি খুবই সাধারণ একটি রোগ। এটি হচ্ছে আমাদের দেহে কোনো খাবার বা বস্তুর প্রতি যে প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটি অ্যালার্জি। শিশুদের সাধারণত বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে অ্যালার্জি। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে অ্যালার্জি সাধারণত সেরে যায়।
তবে অনেকের আবার সারাজীবন অ্যালার্জিতে ভুগতে হতে পারে। আগে অ্যালার্জি ছিল না এমন কোনো খাবার বা বস্তুর প্রতি প্রাপ্তবয়স্করা নতুন করে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারেন। এটা খুবই স্বাভাবিক। অ্যালার্জি সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক যে সংস্থা অর্থাৎ ওয়ার্ল্ড অ্যালার্জি অর্গানাইজেশন জার্নাল তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে যে, দুহাজার আঠারো সালে সারা বিশ্বে যত মানুষ রয়েছে তার অন্তত 30 ভাগ অ্যালার্জি বা এ সম্পর্কিত নানা ধরনের রোগে ভুগে থাকেন।
প্রতিটি মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে। একে বলা হয় ইমিউন সিস্টেম। আমাদের এই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন ঠিকভাবে কাজ করে না বা আমাদের প্রতি ক্ষতিকর নয় এমন সব জিনিসের প্রতি যখন প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে তখনই অ্যালার্জি হয়।
অর্থাৎ আমরা যে খাবার খাই বা আমরা যে বস্তুর সংস্পর্শে আসি সেটা ক্ষতিকর কিনা সেটা অনেক সময় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বুঝতে পারে না।এসব খাবার বা বস্তুর প্রতি তখন সে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে, যা আসলে অ্যালার্জি। আমাদের দেশে অ্যালার্জিতে ভোগেন এমন মানুষের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। আসলে কী হয়?
এলার্জি থেকে কি কি রোগ হতে পারে?
অ্যালার্জিতে হাঁচি থেকে শুরু করে চুলকানি এমনকি শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এই অ্যালার্জি সামান্য অসুবিধা তৈরি করে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে এটি সারা জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। যে বস্তুর প্রতি আপনার অ্যালার্জি আছে, সাধারণত সে বস্তুর সংস্পর্শে আসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই শরীরে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
তবে এটি অনেক সময় কয়েক ঘণ্টা ধরেও হতে পারে। তবে আশার কথা হল, বেশির ভাগ অ্যালার্জি মৃদু এবং নিয়ন্ত্রণে থাকে। মাঝে মাঝে অ্যালার্জির কারণে মারাত্মক ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। একে বলা হয় অ্যানাফিল্যাক্সিস। এছাড়াও অ্যালার্জির কারণে প্রধানত যে উপসর্গগুলো দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো হাঁচি, চুলকানি, সর্দি এবং বন্ধ নাক।
এলার্জির লক্ষণ
চোখে চুলকানি, লাল হয়ে যাওয়া, পানি পড়া এগুলো সাধারণত দেখা দেয়। এছাড়াও আছে শ্বাস নেয়ার সময় বুকে শব্দ বা বুক ভারী হয়ে যাওয়া। শরীর ও ত্বকে লাল লাল হয়ে ফুলে যাওয়া। আমার মনে হয় এটা সবারই হয়। এমন কেউ নেই যে এর অভিজ্ঞতা হয়নি কখনো। এছাড়াও ঠোঁট, জিহ্বা, চোখ এবং মুখ ফুলে যাওয়া এটিও অ্যালার্জির বেশ বড় ধরনের লক্ষণ।
এছাড়াও আছে ত্বক শুকিয়ে যাওয়া বা লাল হয়ে যাওয়া। তবে আপনার কোন বস্তুতে অ্যালার্জি রয়েছে এবং আপনি কীভাবে তার সংস্পর্শে এসেছেন সেটার উপরও নির্ভর করে যে আপনার অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়াটা কেমন হবে। যেমন আপনার যদি ফুলের রেণু তে অ্যালার্জি থেকে থাকে তাহলে আপনার হাঁচি বা সর্দি কাশি হতে পারে।
আপনার যদি ত্বকের অ্যালার্জি হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে র্যাশ হয়ে লাল হয়ে ফুলে উঠবে। আর যদি অ্যালার্জি রয়েছে এমন কোনো খাবার আপনি খেয়ে ফেলেন, তাহলে আপনি সাথে সাথে বা কিছুক্ষণ পর বা যখন প্রতিক্রিয়া শুরু হবে তখন আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন। এ ধরনের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া কয়েক মিনিটের মধ্যে হয় এবং সেটা কখনও কখনও প্রাণঘাতী হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন
উপসর্গগুলো আসলে কী
করতে হবে। দেখা যাক যে এই উপসর্গগুলো আসলে কী। গলা এবং মুখ ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া, ঘুমঘুম ভাব হওয়া বা জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা হওয়া। প্রলাপ বকতে থাকা। ঠোঁট এবং ত্বক নীল হয়ে যাওয়া। পড়ে যাওয়া বা জ্ঞান হারানো। তবে জ্ঞান হারানো বা পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা খুব একটা দেখা যায় না।
আপনার যদি মনে হয় যে আপনার অ্যালার্জি আছে তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তাকে বলতে হবে যে কোন কোন বস্তুর প্রতি আপনার অ্যালার্জিক সমস্যা রয়েছে। সেগুলো কীভাবে সংস্পর্শে আসলে আপনার অ্যালার্জি হয়, অ্যালার্জি হলে সেটা কতক্ষণ থাকে এবং কত বার করে হয় সেটিও বুঝিয়ে বলতে হবে।
আপনার লক্ষণ এবং উপসর্গ এবং আপনার যে জিনিসের প্রতি অ্যালার্জি রয়েছে সেটা পর্যবেক্ষণ করে আপনার চিকিৎসক আপনাকে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা দিয়ে থাকেন। তবে কোনো কারণে যদি অ্যালার্জির উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করানো যেতে পারে। এসব টেস্টগুলো আসলে কী সেটিও একবার দেখে নেয়া যাক।
এলার্জি রোগ নির্নয়ের যে টেষ্ট গুলো করতে পারেন
স্কিন প্রিক টেস্টিং। এক্ষেত্রে আপনার হাতে ত্বকের উপরে কোন এক জায়গায় যে বস্তুতে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে সেই বস্তুর উপাদানসমৃদ্ধ একটি তরল দেয়া হয়। পরে সেখানে আলতোভাবে একটি ছিদ্র করা হয়। তারপরে দেখা হয় যে আপনার অ্যালার্জি আছে কিনা। আপনার যদি অ্যালার্জি থেকে থাকে তাহলে পনের মিনিটের মধ্যেই আপনার হাতের সেই জায়গা ফুলে উঠবে।
রক্ত পরীক্ষা। অনেক সময় স্কিন প্রিক টেস্টিং এর সাথে বা এর পরিবর্তে রক্ত পরীক্ষা করা হয় এটা জানাতে যে আপনার আসলে অ্যালার্জি রয়েছে কিনা। প্যাচ টেস্ট। এতে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে এমন উপাদান একটি ধাতব ডিস্কের সাথে লাগিয়ে সেটি আপনার শরীরের কোন অংশে বেঁধে দেয়া হয়। তারপর আটচল্লিশ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয় যে আসলে ওই উপাদানের প্রতি আপনার সত্যিসত্যি অ্যালার্জি রয়েছে কিনা। এলিমিনেশন ডায়েট। এক্ষেত্রে আপনার যে খাবারের প্রতি অ্যালার্জি রয়েছে
সেই খাবার খেতে না করা হয়। তারপর নির্দিষ্ট সময় পার হলে সেই খাবার আবার খেতে বলা হয় যে ওই খাবারের প্রতি তখন আপনার শরীর কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেয় সেটি জানতে। তবে মনে রাখতে হবে, এই পরীক্ষা কখনই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া করা যাবে না। চ্যালেঞ্জ টেস্টিং। এ ক্ষেত্রে আপনার যে খাবারের প্রতি অ্যালার্জি রয়েছে, সেই খাবার একটু একটু মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়।
দেখতে হবে যে ওই খাবার আসলে আপনার শরীর সহ্য করতে পারে কিনা। তবে এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে থেকে তারপর করতে হবে। সবশেষে অ্যালার্জি টেস্টিং কিট। বাজারে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি টেস্টিং কিট পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ সময়ই সেগুলো যথার্থ মানের হয় না। অ্যালার্জির চিকিৎসা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়।
এলার্জি থেকে বাচঁতে করনীয়
কারণ সবার অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া একই বস্তু বা একই উপাদানে হয় না। তবে অ্যালার্জি যদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় সেক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ অবলম্বন করা যেতে পারে। যাদের খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে তারা অবশ্যই খেয়াল রাখুন যে আপনি কী খাচ্ছেন? যাদের জীবজন্তুদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের যদি পোষা প্রাণী থেকে থাকে, তাহলে পোষা প্রাণীকে যতটা সম্ভব ঘরের বাইরে রাখুন এবং তাদেরকে নিয়মিত গোসল করান।
ছত্রাকে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা যথাসম্ভব ঘর শুকনো রাখুন এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখুন। পরাগ রেণু তে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা ঘাস জন্মে এমন এলাকা এড়িয়ে চলুন। বাতাসে যদি অনেক বেশি পরাগ রেণু থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করুন।
যদি সেটিতেও কাজে না যায় তাহলে ঘরে থাকাটাই ভালো। আর যাদের ডাস্ট মাইট বা ধূলিকণা অ্যালার্জি রয়েছে তারা অ্যালার্জি রোধী কাঁথা বালিশ ব্যবহার করুন। ঘরের মেঝেতে কার্পেটের পরিবর্তে কাঠের মেঝে ব্যবহার করুন। এসব সতর্কতা ছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জির ওষুধ পাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ওষুধ সেবন করা যাবে না।
আমাদের কথা
বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্তই। আশা করি বুঝতে পারছেন আর যদি বুঝতে কোথাও সমস্যা হয় আমাদেরকে মেইল অথবা এখানে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন আমরা ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুত আপনাদের কমেন্টের উত্তর দিব অথবা আপনার মেইলে এন্সার প্রোভাইড করব ।
আজকের এই আর্টিক্যালটি এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আসছি আগামীকাল এলার্জি চুলকানি ঔষধের নাম, এলার্জির সবচেয়ে ভালো ঔষধ, এলার্জি জাতীয় খাবার, কোন কোন খাবারে এলার্জি নেই, চর্ম এলার্জি দূর করার উপায়, এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url