জিবন বিমা কি? বিমার সকল বিষয় বাংলায় বিস্তারিত

 হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন আশা করি অনেক ভাল আছেন অনেকদিন পর আজকে একটি নতুন আর্টিকেল  নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।  আশা করি বুঝতেই পারছেন আজকের আর্টিকেলের শিরোনাম দেখে।  কি বিষয়ে আমরা আজকে আলোচনা করছি। হ্যাঁ বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করব জীবন বীমা কি এবং জীবন বিমার প্রকারভেদ এবং জীবন বীমার  সুযোগ সুবিধা নিয়ে। পৃথিবীতে প্রত্যেকটি দেশে ইন্সুরেন্স কোম্পানি রয়েছে আর ইন্সুরেন্স গুলোতেই জীবন বীমা বা আরো অনেক ধরনের বীমা করার সুযোগ রয়েছে। এখনই ঘাবড়ে যাওয়ার কোন দরকার নেই আমরা আস্তে আস্তে এর প্রত্যেকটি ধরন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি insurance অথবা বিমার সকল বিষয় খুটিনাটি আপনি জানতে পারবেন। এ বিষয়গুলো জানার আগে চলুন আমরা ইতিহাস থেকে জেনে নেই যে ইন্সুরেন্স কবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ইন্সুরেন্স টা আসলে কি?পোষ্টসূচিঃ 




ইন্সুরেন্স বা বিমা কবে কিভাবে শুরু হয়?

আমরা অনেকেই মনে করি ইন্সুরেন্স বা বিমা শুরু হয়েছে আধুনিক যুগে। কিন্তু বিষয়টা একদম ভুল তার কারন আজ থেকে প্রায় ৪ হাজার বছর আগে এই ইন্সুরেন্স বা বিমা উদ্ভোদন হয়েছে। সর্বপ্রথম বিমা চালু করেন ইরাক, ইরান ও সিরিয়া। তখন এই বিমা শুধু সমুদ্র জাহাজের জন্য রিন নিতে পারতেন নাবিকরা। আবার সেই জাহাজ  যদি সমুদ্রে ডুবে যায় তাহলে সেই রিন পরিশোধ করা লাগতো না নাবিকদের। এই বিষয়টি তখন এতো জনপ্রিয় ছিল না। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সে এই একই বিমা উদ্ভোদন শুরু করে। এভাবেই বিমা শুরু হতে থাকে। আর বিমার গ্রাহকদের জন্য আরও চমৎকার অফার আনতে থাকে বিমার কোম্পানী গুলো। সেখান থেকেই এই বিমার প্রচলন শুরু হয় । আস্তে আস্তে যখন এই বিমায় গ্রাহক বা মানুষ বৃদ্ধি পায় তখন আরো প্রসারিত হয় এই বিমা বা ইন্সুরেন্স। পরে তা সারা বিশ্বে শুরু হতে থাকে। আর এখন এই বিমার গ্রাহক কোটি কোটি  গ্রাহকে রুপান্তরিত হয়েছে। ইন্সুরেন্স কোম্পানি গুলো এখন আরো কয়েকটি সেবার বিমা দিয়ে থাকে। তা হলো ঃ জিবন বিমা, সাধারণ বিমা, দুর্ঘটনা বিমা, স্বাস্থ্য বিমা, ভ্রমন বিমা, ঘড়ের বিমা,  সম্পতি বিমা, অগ্নি বিমা ইত্যাদি। এই বিমাগুলো এখন সারাবিশ্বে ব্যবহৃত। আশা করি বুঝতে পারছেন বিমা কিভাবে শুরু হয়েছে এবং এটির প্রকার কি কি।

ইন্সুরেন্স বা বিমা কি?

ইন্সুরেন্স বা বিমা হলো একটি অর্থনৈতিক চুক্তি, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান (যেমন বিমা কোম্পানি) এর সঙ্গে চুক্তি করে, যাতে বিপদ, ক্ষতি বা দুর্ঘটনা ঘটলে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়। বিমার মূল উদ্দেশ্য হলো ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা প্রদান করা এবং ক্ষতির ফলে আর্থিক চাপ কমানো।

ইন্সুরেন্স বা বিমার সাধারণভাবে দুটি মূল দিক রয়েছে:

  1. ঝুঁকি ভাগাভাগি: বিমা একটি ঝুঁকি ভাগাভাগির প্রক্রিয়া। এখানে, একটি বড় ঝুঁকি (যেমন দুর্ঘটনা, মৃত্যু, সম্পত্তির ক্ষতি ইত্যাদি) বিভিন্ন মানুষের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। বিমাকারী প্রতি মাসে বা বার্ষিক ভিত্তিতে প্রিমিয়াম নামে একটি নির্দিষ্ট অর্থ বিমা কোম্পানিকে প্রদান করেন। এর পর, যদি কোনো দুর্ঘটনা বা ক্ষতি ঘটে, তবে বিমা কোম্পানি নির্ধারিত অর্থ প্রদান করে।

  2. অর্থনৈতিক সুরক্ষা: বিমা মানুষের বা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে, বিশেষ করে যদি কোনো অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা বা ঘটনা ঘটে। এর মাধ্যমে, যারা বিমা গ্রহণ করেন তারা তাঁদের বিপদজনক বা আর্থিক ক্ষতির পরিস্থিতিতে বিমা কোম্পানির সাহায্য পান।

বিমার প্রকার

বিমা সাধারণত দুটি প্রধান প্রকারে বিভক্ত:

  1. জীবন বিমা (Life Insurance) - মানুষের জীবনকে সুরক্ষিত করে।
  2. অবজেক্ট বিমা (Non-Life Insurance) - যেমন স্বাস্থ্য বিমা, গাড়ি বিমা, বাড়ি বিমা ইত্যাদি।

বিমার মাধ্যমে আপনি আপনার জীবনের অজ্ঞাত বিপদের জন্য আর্থিক সুরক্ষা পেতে পারেন।


বিমা কত প্রকার ও কি কি ?

এটি ব্যক্তির জীবনকে নিরাপদ করে এবং যদি বিমাকারী মারা যান, তবে তাঁর পরিবার বা নির্ধারিত উত্তরাধিকারী একটি নির্দিষ্ট অর্থ পেয়ে থাকে। জীবন বিমার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পলিসি রয়েছে, যেমন:

  • ট্রাডিশনাল লাইফ পলিসি (Traditional Life Policy)
  • টার্ম লাইফ পলিসি (Term Life Policy)
  • এন্ডওমেন্ট পলিসি (Endowment Policy)
  • ইউনিট-লিঙ্কড পলিসি (Unit Linked Insurance Plan - ULIP)
  • পেনশন পলিসি (Pension Policy)
২. অবজেক্ট বিমা (Non-Life Insurance)

এটি মানুষের জীবন ছাড়া অন্যান্য জিনিসের উপর বিমা। সাধারণত এতে সম্পত্তি, যানবাহন বা অন্যান্য বিপদের বিরুদ্ধে বিমা হয়। এর মধ্যে কিছু প্রকার হলো:

  • যানবাহন বিমা (Motor Insurance)
  • স্বাস্থ্য বিমা (Health Insurance)
  • বাড়ি বিমা (Home Insurance)
  • বাণিজ্যিক বিমা (Commercial Insurance)
  • ভ্রমণ বিমা (Travel Insurance)
  • বিপদ বিমা (Accident Insurance)

এছাড়া বিমার অন্যান্য প্রকার যেমন ক্রেডিট বিমা, কৃষি বিমা, এবং প্রপার্টি বিমাও রয়েছে।

বিমা সাধারণত মানুষের জীবনের অনিশ্চিত দিকগুলোকে নিরাপদ করতে ব্যবহৃত হয়।

জীবন বীমা কি?

জীবন বিমা (Life Insurance) হলো একটি চুক্তি, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি (বিমাকারী) বিমা কোম্পানির কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ (প্রিমিয়াম) প্রদান করেন, এবং বিপরীতে কোম্পানি তার জীবন বা মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে নির্ধারিত অর্থ (বীমা শো/ক্লেইম) প্রদান করে। জীবন বিমার মূল উদ্দেশ্য হলো বিমাকারীর পরিবার বা নির্ধারিত beneficiaries-কে আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করা, যদি বিমাকারীর আকস্মিক মৃত্যু ঘটে।

এটি মূলত তিনটি প্রধান প্রকারে বিভক্ত হতে পারে:

১. টার্ম লাইফ পলিসি (Term Life Policy)

এই পলিসির অধীনে একটি নির্দিষ্ট সময়ের (যেমন ১০, ২০, বা ৩০ বছর) জন্য বিমা coverage পাওয়া যায়। যদি ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিমাকারী মারা যান, তবে নির্ধারিত বীমা শো/ক্লেইম পরিশোধ করা হয়। তবে, যদি বিমাকারী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেঁচে থাকেন, তাহলে কোনো টাকা ফেরত পাওয়া যায় না।

২. এন্ডওমেন্ট পলিসি (Endowment Policy)

এই পলিসির মাধ্যমে বিমাকারী নির্দিষ্ট সময় পর একটি অর্থ প্রদান পেতে পারেন, যদি তিনি জীবিত থাকেন। এবং, যদি বিমাকারী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মারা যান, তবে তার পরিবারকে নির্ধারিত বীমা শো প্রদান করা হয়। এটি দ্বৈত সুবিধা দেয় — একদিকে জীবন বিমা এবং অন্যদিকে একটি সঞ্চয় পরিকল্পনা হিসেবে কাজ করে।

৩. ইউনিট-লিঙ্কড ইনস্যুরেন্স প্ল্যান (ULIP - Unit Linked Insurance Plan)

এটি জীবন বিমা এবং বিনিয়োগের একটি সংমিশ্রণ। এখানে, বিমাকারীর প্রিমিয়ামের একটি অংশ বিমা কভারেজে ব্যবহৃত হয়, এবং বাকী অংশ শেয়ার মার্কেট বা অন্যান্য আর্থিক যন্ত্রে বিনিয়োগ করা হয়। এর ফলে, এটি লাভ বা ক্ষতির ঝুঁকি বহন করে, তবে দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের জন্য একটি ভাল সুযোগ প্রদান করে।

৪. পেনশন পলিসি (Pension Policy)

এটি একটি জীবন বিমা পলিসি যা আপনাকে অবসরকালে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক অর্থ প্রদান করে। বিমাকারী যদি নির্ধারিত বয়সে অবসর নেন, তবে পেনশন পলিসি তাকে একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বা মৃত্যুর পরও নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে থাকে।

জীবনের নানা ঘটনা বা বিপদের বিরুদ্ধে সুরক্ষা:

  • মৃত্যু: বিমাকারী যদি আকস্মিকভাবে মারা যান, তার পরিবার বিমা শো পায়।
  • অসুস্থতা বা অক্ষমতা: কিছু জীবন বিমায় বিমাকারী গুরুতর অসুস্থ হলে বা অক্ষম হলে অর্থের সাহায্য পাওয়া যায়।
  • ট্যাক্স সুবিধা: জীবন বিমায় নির্দিষ্ট পলিসির অধীনে ট্যাক্স সুবিধাও পাওয়া যায়।

জীবন বিমার সুবিধা হলো এটি আপনাকে বিশ্বাসযোগ্য সুরক্ষা প্রদান করে, বিশেষ করে যদি আপনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হন বা আপনার পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান।

জীবন বীমার সুবিধাগুলো কি কি?

১. পরিবারের আর্থিক সুরক্ষা

জীবন বিমার মূল সুবিধা হলো বিমাকারীর মৃত্যু হলে তার পরিবারের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করা। যদি কোনো ব্যক্তি জীবনের অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে মারা যান, তবে তার পরিবারের সদস্যরা নির্ধারিত বীমা শো পেয়ে থাকেন। এই অর্থ তাদের দৈনন্দিন খরচ, ঋণ পরিশোধ, শিক্ষার খরচ বা অন্যান্য জরুরি প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক হতে পারে।

২. সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সুযোগ

কিছু জীবন বিমা পলিসি (যেমন এন্ডওমেন্ট পলিসি বা ইউনিট-লিঙ্কড ইনস্যুরেন্স প্ল্যান - ULIP) শুধুমাত্র জীবন সুরক্ষা নয়, বরং সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ এর সুযোগও দেয়। এ ধরনের পলিসি দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের জন্য উপকারী, এবং আপনি লাভজনক বিনিয়োগের মাধ্যমে পলিসির মেয়াদ শেষে একটি ভালো পরিমাণ টাকা ফিরে পেতে পারেন।

৩. আবশ্যকতা অনুসারে ট্যাক্স সুবিধা

বিভিন্ন দেশে জীবন বিমা পলিসি আনার মাধ্যমে ট্যাক্স রিলিফ পাওয়া যায়। যেমন, ভারতের মতো দেশে প্রিমিয়াম পরিশোধে আইটিআই (Section 80C) অধীনে ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যায়, এবং বীমা শো পাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু ট্যাক্স সুবিধা রয়েছে। এর মাধ্যমে ট্যাক্সের বোঝা কমানো যায়।

৪. অবসরকালীন পেনশন সুবিধা

কিছু জীবন বিমা পলিসি, যেমন পেনশন পলিসি, বিমাকারীকে অবসরকালীন মাসিক পেনশন বা অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা করে। এই পলিসি বিমাকারীর বৃদ্ধ বয়সে বা অবসর গ্রহণের পর তাকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করে, যাতে তিনি তার জীবনের অবশিষ্ট সময়টি আরামদায়কভাবে কাটাতে পারেন।

৫. আকস্মিক অসুস্থতার পর সহায়তা

কিছু জীবন বিমা পলিসি অসুস্থতার কারণে অক্ষমতা বা বিশেষ চিকিৎসা খরচ কাভার করার সুবিধা প্রদান করে। এতে ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হলে বা দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে অক্ষম হলে, বিমা কোম্পানি অর্থের সহায়তা প্রদান করে।

৬. ঋণ পরিশোধের নিশ্চয়তা

যদি বিমাকারী কোনো ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক ঋণ নেন এবং তার অকাল মৃত্যু হয়, তাহলে জীবন বিমা সেই ঋণ পরিশোধে সহায়তা করতে পারে। এতে করে, পরিবার বা উত্তরাধিকারীদের ঋণের বোঝা বহন করতে হয় না।

৭. আর্থিক পরিকল্পনা এবং মানসিক শান্তি

জীবন বিমা নিশ্চিত করে যে, বিমাকারী মারা যাওয়ার পর তার পরিবার আর্থিকভাবে নিরাপদ থাকবে। এর ফলে, বিমাকারী মানসিক শান্তি পেতে পারেন, কারণ তিনি জানেন যে, তার পরিবারের সদস্যরা কঠিন পরিস্থিতিতে আর্থিক সমস্যায় পড়বে না।

৮. স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রা উন্নতি

কিছু জীবন বিমা পলিসি স্বাস্থ্য সুবিধাও প্রদান করে, যেমন বার্ষিক স্বাস্থ্য চেকআপ, হাসপাতালে ভর্তি অথবা চিকিৎসা খরচের অংশবিশেষ শোধ করা। এটি বিমাকারীর সাধারণ স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার উন্নতি সাধন করে।

৯. পলিসি ঋণ সুবিধা

কিছু জীবন বিমা পলিসি ঋণ গ্রহণের সুযোগ দেয়, যদি আপনার পলিসি কোনো সঞ্চয়ের পরিমাণ তৈরি করে থাকে। এই ঋণটি আপনাকে জরুরি অবস্থায় অর্থ সাহায্য হিসেবে ব্যবহার করতে সাহায্য করে, এবং এটি সাধারণত কম সুদে প্রদান করা হয়।

১০. বিশেষ চুক্তি ও ক্লেইম সুবিধা

জীবন বিমার পলিসি অনুযায়ী, বিমাকারীর পরিবারের সদস্যরা বীমা শো বা ক্লেইম পেতে পারেন যদি বিমাকারী আকস্মিকভাবে মারা যান। অনেক পলিসিতে, বিমাকারীর মৃত্যু বা দুর্ঘটনা পরিস্থিতির জন্য বিশেষ সুবিধাও থাকে, যেমন দ্বিগুণ বা তিনগুণ বীমা পরিমাণ প্রদান।

জীবন বীমার অসুবিধা গুলো কি কি?

১. প্রিমিয়াম পরিশোধের উচ্চ খরচ

  • টাকা পরিশোধের বোঝা: জীবন বিমার প্রিমিয়াম অনেক সময় উচ্চ হতে পারে, বিশেষ করে যখন বিমাকারী বয়সে বড় হন বা কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। প্রিমিয়াম প্রতি মাসে বা বছরে প্রদান করতে হয়, যা কিছু মানুষের জন্য আর্থিকভাবে চাপের কারণ হতে পারে।
  • সাধারণ জীবন বিমার তুলনায় সঞ্চয়বান্ধব পলিসি বেশি খরচ করতে হয় (যেমন এন্ডওমেন্ট পলিসি বা ইউনিট-লিঙ্কড পলিসি), কারণ এতে বিমাকারীকে সঞ্চয়েরও সুবিধা দেওয়া হয়, যা প্রিমিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

২. বীমা পলিসির জটিলতা

  • অত্যন্ত জটিল শর্তাবলী: কিছু জীবন বিমা পলিসির শর্তাবলী, টার্মস এবং কন্ডিশন বুঝতে অনেক সময় কঠিন হতে পারে। বিনিয়োগ সংক্রান্ত জীবন বিমা (যেমন ULIP) আরও বেশি জটিল হয়, কারণ এটি শেয়ার মার্কেটের উপর নির্ভরশীল এবং তার পরিণতি অজানা থাকতে পারে।
  • কাস্টমাইজেশন সুবিধার অভাব: কিছু বিমা কোম্পানি বা পলিসি বিক্রেতারা একটি সাধারণ পলিসি অফার করেন, যা আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ঠিকভাবে কাস্টমাইজ করা সম্ভব হয় না।

৩. কোম্পানির আর্থিক স্থিতিশীলতার ঝুঁকি

  • বিমা কোম্পানির অবস্থা: জীবন বিমা কিনলে, আপনি যে বিমা কোম্পানির কাছে পলিসি নেন, তার আর্থিক স্বাস্থ্য ও স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোম্পানির অবস্থা খারাপ হয় বা কোনো কারণে কোম্পানি ব্যর্থ হয়, তবে আপনি পলিসি শো পেতে বা পলিসির সুবিধা গ্রহণ করতে সমস্যায় পড়তে পারেন।
  • বিমা ক্লেইম পরিশোধের বিলম্ব: কখনও কখনও বিমা কোম্পানি ক্লেইম পরিশোধের ক্ষেত্রে বিলম্ব করে, বা কিছু নির্দিষ্ট শর্তে ক্লেইম পেমেন্ট প্রত্যাখ্যান করতে পারে, যা গ্রাহকের জন্য হতাশাজনক হতে পারে।

৪. সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সুবিধা সীমিত হতে পারে

  • বিনিয়োগের ঝুঁকি: যেমন ULIP পলিসিতে বিমাকারীর প্রিমিয়ামের একটি অংশ শেয়ার মার্কেট বা অন্যান্য বিনিয়োগে যায়। এটি বাজারের ওঠানামা এবং বিনিয়োগের ঝুঁকির কারণে, কখনও কখনও নূন্যতম রিটার্ন বা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
  • লো রিটার্ন: কিছু জীবন বিমা পলিসি যেমন ট্রাডিশনাল পলিসি বা এন্ডওমেন্ট পলিসি, যদিও জীবনের সুরক্ষা প্রদান করে, কিন্তু এতে সঞ্চয়ের রিটার্ন বা মুনাফা তুলনামূলক কম হতে পারে। এই ধরনের পলিসি দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের জন্য খুবই উপযুক্ত নাও হতে পারে।

৫. কোনো বীমা সুবিধা না পাওয়ার ঝুঁকি

  • নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মৃত্যু না হলে কোনো সুবিধা নেই: যেমন টার্ম লাইফ পলিসি-তে বিমাকারী যদি নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বেঁচে থাকেন, তবে তিনি কোনো অর্থ ফেরত পান না। এটি অনেক মানুষকে বিমা নিতে অনুৎসাহিত করতে পারে, কারণ তারা মনে করেন, টাকা শুধু প্রিমিয়ামের মধ্যে চলে যাবে এবং কোনো রিটার্ন পাওয়া যাবে না।

৬. সীমিত কভারেজ

  • অনেক সময় পলিসি কভারেজ যথেষ্ট হয় না: জীবন বিমা পলিসির কভারেজ যদি যথেষ্ট পরিমাণ না হয়, তবে বিমাকারীর মৃত্যু বা দুর্ঘটনার পর তার পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা যথেষ্ট হতে নাও পারে। সঠিক কভারেজ চিহ্নিত না করা হলে, পরিবারকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা না পাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।
  • সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সীমাবদ্ধতা: কিছু জীবন বিমা শুধু মৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত কভারেজ দেয়, এবং অন্যান্য অসুস্থতা বা আর্থিক চাপের ক্ষেত্রে সমর্থন নাও দেয়।

৭. বিমার শর্তাবলী পরিপূর্ণ না হলে অযোগ্যতা

  • অযোগ্যতা বা পূর্ববর্তী অসুস্থতার সমস্যা: অনেক পলিসি বিশেষ কিছু শর্ত বা মেডিকেল পরীক্ষার উপর নির্ভরশীল থাকে। যদি আপনি পূর্বে কোনো গুরুতর অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে বিমা কোম্পানি আপনাকে পলিসি প্রদান নাও করতে পারে, বা আপনার পলিসির প্রিমিয়াম বাড়িয়ে দিতে পারে।

৮. লং টার্ম কমিটমেন্ট

  • দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক বাধ্যবাধকতা: জীবন বিমা একটি দীর্ঘমেয়াদী কমিটমেন্ট। একবার পলিসি নেয়া হলে, আপনাকে অনেক বছর ধরে প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হবে। যদি ভবিষ্যতে আপনার আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়, তবে এই অর্থ পরিশোধের চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।

জীবন বীমা কিভাবে করব?

১. আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বিমা নির্বাচন করুন

প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে, আপনার জীবনে কী ধরনের সুরক্ষা দরকার এবং আপনার অর্থনৈতিক লক্ষ্য কী। জীবন বিমা বিভিন্ন ধরনের হয়, তাই আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি পলিসি নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে প্রধান কিছু পলিসি হল:

  • টার্ম লাইফ পলিসি: এটি সাধারণত কম প্রিমিয়াম, কিন্তু শুধুমাত্র মৃত্যু হলে পেমেন্ট প্রদান করে। সস্তা এবং সহজ।
  • এন্ডওমেন্ট পলিসি: সঞ্চয় এবং জীবন সুরক্ষা উভয়ই দেয়। নির্দিষ্ট সময় পর অর্থ ফেরত পাওয়া যায়।
  • ইউনিট-লিঙ্কড পলিসি (ULIP): জীবন সুরক্ষা এবং বিনিয়োগের সুবিধা দেয়।
  • পেনশন পলিসি: অবসরকালীন জীবনের জন্য সুরক্ষা প্রদান করে।

আপনার বয়স, স্বাস্থ্য, আর্থিক অবস্থা এবং পরিবারের পরিস্থিতি অনুযায়ী পলিসি নির্বাচন করুন।

২. বিমা কোম্পানি নির্বাচন করুন

বিমা কোম্পানি নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিশ্বস্ত এবং প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি নির্বাচন করুন, যাদের খ্যাতি এবং ক্লেইম পরিশোধের ইতিহাস ভালো। কিছু জনপ্রিয় জীবন বিমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে:

  • বাংলাদেশে: প্রগতি লাইফ, সোনালী লাইফ, গ্রামীণ ফাউন্ডেশন লাইফ, মেটলাইফ বাংলাদেশ, শান এলআইসি।
  • ভারতসহ অন্যান্য দেশে: লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন (LIC), স্ট্যান্ডার্ড লাইফ, হ্যাচেট, স্নোডার লাইফ, টাটা অ্যাট সি, প্রুডেনশিয়াল, এবং অন্যান্য।

৩. আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন

জীবন বিমা করতে হলে কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে, যেমন:

  • আপনার ব্যক্তিগত তথ্য: নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, পরিবারের সদস্যদের তথ্য।
  • স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য: যেমন আপনার শারীরিক অবস্থা, বর্তমান অসুস্থতা, আগের স্বাস্থ্য সমস্যা।
  • অর্থনৈতিক অবস্থা: আপনার আয়, ব্যয়, ঋণ এবং সম্পত্তির তথ্য।
  • ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস (যদি থাকে)।

এই তথ্যগুলো পলিসি আবেদন প্রক্রিয়া এবং প্রিমিয়ামের হিসাব করতে সহায়তা করবে।

৪. পলিসির প্রিমিয়াম এবং শর্তাবলী যাচাই করুন

যে পলিসিটি আপনি নিতে চান, তার প্রিমিয়াম এবং শর্তাবলী যাচাই করুন। প্রতিটি পলিসির প্রিমিয়াম, কভারেজ, শর্তাবলী, এবং ক্লেইম প্রক্রিয়া আলাদা হতে পারে। বিভিন্ন কোম্পানির পলিসির তুলনা করুন এবং দেখে নিন আপনি কোনটি গ্রহণ করতে চান।

  • প্রিমিয়াম: কত টাকা পরিশোধ করতে হবে? কত সময় পর পর পরিশোধ করতে হবে?
  • কভারেজ: কিভাবে এবং কোন পরিস্থিতিতে আপনার পরিবার অর্থ পাবে?
  • অফার বা স্কিম: কোনো বিশেষ অফার বা স্কিম আছে কি?

৫. অনলাইন বা অফলাইনে আবেদন করুন

জীবন বিমা কিনতে দুটি পদ্ধতি রয়েছে:

  • অনলাইন আবেদন: আজকাল বেশিরভাগ বিমা কোম্পানির ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি সহজেই পলিসি নির্বাচন করে আবেদন করতে পারেন। অনলাইনে আপনি বিমার পরিমাণ, প্রিমিয়াম এবং শর্তাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন।
  • অফলাইন আবেদন: যদি আপনি অনলাইনে আবেদন করতে না চান, তবে আপনি নির্দিষ্ট বিমা কোম্পানির অফিসে গিয়ে তাদের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এবং পলিসি আবেদন করতে পারেন।

৬. মেডিকেল পরীক্ষা

বেশিরভাগ জীবন বিমা কোম্পানি মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি যাচাই করে। সাধারণত টাকা পরিশোধের পর, কোম্পানি আপনার বয়স, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার উপর ভিত্তি করে একটি পলিসি প্রদান করবে।

  • অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পলিসি পাওয়া কিছুটা কঠিন হতে পারে, তবে আপনি কভারেজের সীমা বা প্রিমিয়াম বৃদ্ধির জন্য কিছু বিকল্প পেতে পারেন।

৭. পলিসি গ্রহণের পর দস্তাবেজের যাচাই

পলিসি গ্রহণের পর আপনি বিমা কোম্পানি থেকে পলিসি ডকুমেন্ট পাবেন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অবশ্যই বিমা পলিসির শর্তাবলী, প্রিমিয়ামের পরিমাণ, কভারেজ, এবং ক্লেইম প্রক্রিয়া দেখে সঠিকভাবে যাচাই করুন।

  • পলিসির প্রতি ধারণা থাকতে হবে যে, বিমাকারী পরিবারের সদস্য বা বেনিফিশিয়ারি কে হতে হবে।
  • কোন ক্ষেত্রে বিমা শো প্রদান করা হবে এবং কোন ক্ষেত্রে অযোগ্যতা থাকবে।

৮. বীমা প্রিমিয়াম পরিশোধ করুন

প্রথম প্রিমিয়াম পরিশোধ করার পরে, আপনার পলিসি সক্রিয় হয়ে যাবে। বিমা প্রিমিয়াম আপনি সাধারণত সালানা, মাসিক, বা পারতোকালি পরিশোধ করতে পারবেন। নিয়মিত প্রিমিয়াম পরিশোধ করা নিশ্চিত করুন, কারণ এর পরিপূর্ণতা বিমা পলিসির কার্যকারিতা নির্ধারণ করে।

৯. নির্ধারিত সময় পর পলিসি পর্যালোচনা করুন

এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনি আপনার জীবন পরিস্থিতি ও লক্ষ্য অনুযায়ী পলিসি পুনরায় পর্যালোচনা করেন। কিছু বছর পর যদি আপনার পরিবারের সদস্য বৃদ্ধি পায় বা আর্থিক অবস্থা পরিবর্তন হয়, তবে পলিসি পরিবর্তন করা বা বাড়ানো যেতে পারে।

জীবন বীমা করতে কি কি লাগে?

জীবন বীমা করতে গেলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট নথিপত্র এবং তথ্য প্রয়োজন হবে। বীমা প্রক্রিয়া শুরু করার আগে নিচে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো প্রস্তুত রাখতে হবে:

১. বয়স এবং পরিচয় প্রমাণ

  • জন্ম সনদ বা এনআইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র)
  • পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  • পোস্ট অফিস বা অন্য কোনো সরকারি দলিল যা আপনার বয়স এবং পরিচয় প্রমাণ করতে পারে।

২. স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য

  • মেডিকেল হিস্ট্রি: আপনার অতীতের রোগব্যাধি, বর্তমানে চলমান কোনো চিকিৎসা বা শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
  • শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট: বেশিরভাগ বীমা কোম্পানি পলিসি আবেদনকারীর শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট চাইতে পারে (যেমন: ব্লাড প্রেশার, শারীরিক গঠন, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ইত্যাদি)।
  • ডাক্তারের রিপোর্ট (যদি পূর্বে কোনো গুরুতর রোগ বা অসুস্থতা থাকে): কিছু কোম্পানি পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য অতিরিক্ত প্রিমিয়াম বা শর্ত আরোপ করতে পারে।

৩. আর্থিক তথ্য

  • মাসিক/বার্ষিক আয়: আপনার আয় এবং অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে তথ্য, যাতে বিমা কোম্পানি আপনাকে উপযুক্ত কভারেজ এবং প্রিমিয়াম নির্ধারণ করতে পারে।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা কনফারমেশন লেটার: আপনার আয় এবং অন্যান্য আর্থিক তথ্য প্রমাণের জন্য।

৪. পরিবারের সদস্যদের তথ্য (Beneficiaries)

  • বেনিফিশিয়ারির নাম, বয়স ও সম্পর্ক: যাদের আপনি আপনার বিমা পলিসির সুবিধা দিতে চান (যেমন: স্ত্রীর নাম, সন্তান বা অন্য কোনো পরিবারের সদস্য)। বিমা পলিসির শর্তাবলী অনুযায়ী, যদি বিমাকারী মারা যান, তবে বেনিফিশিয়ারি এই টাকা পাবেন।

৫. পেশাগত তথ্য

  • পেশা: কিছু বীমা কোম্পানি পেশার উপর ভিত্তি করে প্রিমিয়াম নির্ধারণ করে। যেমন, যদি আপনার পেশা ঝুঁকিপূর্ণ হয় (যেমন: বিল্ডিং নির্মাণকর্মী, পাইলট ইত্যাদি), তাহলে আপনাকে বেশি প্রিমিয়াম দিতে হতে পারে।
  • কর্মস্থল বা ব্যবসার তথ্য: আপনি কোথায় কাজ করেন বা ব্যবসা পরিচালনা করেন তা জানাতে হবে।

৬. ধূমপান বা মদ্যপান সম্পর্কিত তথ্য

  • ধূমপান ও মদ্যপান সম্পর্কিত তথ্য: আপনি যদি ধূমপান করেন বা মদ্যপান করেন, তবে বিমা কোম্পানি এর ভিত্তিতে অতিরিক্ত প্রিমিয়াম বা শর্ত আরোপ করতে পারে।

৭. পলিসি প্রিমিয়ামের পরিমাণ এবং পরিশোধ পদ্ধতি

  • প্রিমিয়াম পরিশোধের পদ্ধতি: মাসিক, বা বার্ষিক ভিত্তিতে প্রিমিয়াম পরিশোধের জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নির্বাচন করতে হবে। এই জন্য ব্যাংক একাউন্টের তথ্য বা ক্রেডিট কার্ড/ ডেবিট কার্ড এর তথ্য থাকতে পারে।
  • প্রিমিয়ামের পরিমাণ: পলিসির কভারেজ অনুযায়ী কত টাকা প্রিমিয়াম দিতে হবে তার হিসাব।

৮. বিমা কোম্পানির শর্তাবলী এবং পলিসি ডকুমেন্ট

  • বিমা পলিসি শুরু করার পর, আপনাকে বিমা কোম্পানির শর্তাবলী এবং পলিসি ডকুমেন্ট সম্পূর্ণভাবে পড়ে বুঝে সাইন করতে হবে। এখানে বিমার কভারেজ, ক্লেইম প্রক্রিয়া, পলিসির মেয়াদ, শর্তাবলী সবই থাকবে।

৯. মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট (যদি প্রয়োজন হয়)

  • বয়স ৪৫ বছর বা তার উপরে হলে, এবং কিছু বীমা পলিসি, বিশেষ করে স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত পরিকল্পনায় মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে। যেমন ব্লাড টেস্ট, এক্স-রে, ইসিজি ইত্যাদি। সাধারণত, এসব পরীক্ষার খরচ বিমাকারীকে বহন করতে হয়।

১০. অফিসিয়াল ফর্ম

  • বিমা পলিসি নিতে আবেদন করার সময় পলিসি আবেদন ফর্ম পূর্ণ করতে হয়। বিমা কোম্পানি থেকে এই ফর্ম পাওয়া যাবে।

১১. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা পেমেন্ট মেথড

  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর: আপনার প্রিমিয়াম পরিশোধের জন্য ব্যাংক একাউন্টের তথ্য। কিছু বিমা কোম্পানি ডাইরেক্ট ডেবিট বা অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রিমিয়াম গ্রহণ করে।

জীবন বীমা করার প্রক্রিয়া

  1. কোম্পানি নির্বাচন: প্রথমে একটি নির্ভরযোগ্য বীমা কোম্পানি নির্বাচন করুন।
  2. পলিসি নির্বাচন: আপনার প্রয়োজন অনুসারে একটি পলিসি নির্বাচন করুন (টার্ম, এন্ডওমেন্ট, ULIP, পেনশন ইত্যাদি)।
  3. আবেদন ফর্ম পূরণ করুন: আবেদন ফর্ম পূরণ করে, প্রয়োজনীয় নথি জমা দিন।
  4. মেডিকেল পরীক্ষা: আপনার বয়স এবং শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে মেডিকেল পরীক্ষা হতে পারে।
  5. প্রিমিয়াম পরিশোধ করুন: প্রথম প্রিমিয়াম পরিশোধের পর পলিসি কার্যকর হবে।
  6. পলিসি ডকুমেন্ট গ্রহণ: পলিসি ডকুমেন্ট যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে নিন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url