শবে কদরে যে সকল আমল করবেন - শবে কদরের ফজিলত

 শবে কদরের রাত সারা বছরের রাতের চেয়ে উত্তম। সারা বছরের ইবাদত এর তুলনায় শবে কদরের ইবাদত উত্তম। এই রাতে আমাদের খুব বেশি নফল নামাজ পড়তে হয়। পবিত্র কোরআন ও আল হাদিসের বর্ননা অনুসারে শবে কদরের রাত আমাদের মুসলিমদের জন্য বিরাট ফজিলত পুর্ন একটি রাত।

শবে কদর এতোটাই বরকত পূর্ন রাত যে, এর সওয়াব অতলনীয়। রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের সময়কে বলা  হয় নাজাত। এর কারন মহান আল্লাহ এই মহান রমজানের ২৭ তম রোজার রাতকে শবে কদর করেছেন। আল্লাহ এই রাতে বান্দার অতি নিকটে আসে এবং বান্দার আবদার বা দোআ কবুল করে।

শবে কদর এর বিস্তারিতপোষ্টসূচিঃ

যেসকল আমল শবে কদরের

পবিত্র কোরআন শরিফে এই রাতকে লাইলাতুল কদর বলেছেন। এই রাত এতো টাই ফজিল পূর্ন রাত যে, বান্দার সমস্ত গুনাহ মাফ করা হয়। তাই এই শবে কদর বা লাইলাতুল কদর এই রাতে আমাদের যে সকল আমল আল্লাহ পছন্দ করে থাকেন । তা হলো এই রাতে আমাদের বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে হবে চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব রাকাত দীর্ঘ করার।

এই রাতে মহান আল্লাহ জীবরাঈল আঃ ও ফেরাস্তাদের পেরন করেন পৃথিবীতে। তাই আমাদের প্রচুর ইবাদত করা প্রয়োজন এই পবিত্র রাতে। আমাদের ইস্তেগফার ও যিকির করাও অতি গুরুপ্তপূর্ন। এই রাতে মহান আল্লাহ তার রহমতের দরজা খুলে দেন এবং বান্দার নেক দোয়া কবুল করেন । আমাদের উচিত এই রাতে সারা বছরের নফল ইবাদত গুলি পুরন করার চেষ্টা করা।

যে নিয়মে শবে কদরের আমল গুলো করবেন

এই রাতে ইবাদত করার বা আমল করার বেশ কিছু নিয়ম আছে যেগুলো মানা অত্যন্ত জরুরি। আমরা জানি এই রাত সারা বছরের রাতের তুলনায় উত্তম । তাই আমাদের উচিত নিয়ম গুলো মেনে সঠিক ভাবে আমল করা । আমলের নিয়ম গুলো নিম্নরুপঃ
  • এই রাতে বা শবে কদর রাতে গুরুপ্ত সহকারে দীর্ঘক্ষন কোরআন তেলোয়াত করুন।
  • সালাতুল হাজত নামাজ বা নফল সালাত বেশি বেশি পরুন।
  • এই রাতে যত বেশি পারেন যিকির করতে থাকুন।
  • সুবাহান আল্লা, আলহামদু লিল্লাহ,  লা ইলাহা ইল্লাহ বেশি বেশি পরতে থাকুন।
  • আল্লাহর কাছে বেশি বেশি আস্তাগফার পড়ুন এবং আপনার কৃত গুনাহের জন্য ক্ষমা পার্থনা করুন।
  • খুব বেশি পরিমানে কালেমায়ে তাওহিদ পড়ুন অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
  • পবিত্র কোরআনের দীর্ঘ আয়াতের সূরা গুলো বেশি বেশি পাঠ করুন।
  • শবে কদরের আমলের ফাকে ফাকে সুরা ইখলাছ বেশি বেশি পাঠ করুন।
  • বিতর নামাজের পূর্বে মনোযোগ সহকারে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করুন।

শবে কদর রাতে যেসব আমল করা যাবে

শবে কদর রাতে যে সব আমল করা যাবে যা কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত জানানো হলো।
আমাদের জীবনে বহু গুনাহ করে থাকি যা বলার মতো নয় । এই গুনাহ গুলো আল্লাহর করুনা ছাড়া মাফ করার আর উপায় নেই । তাই মহান আল্লাহ আমাদের সেই কৃত গুনাহ মাফের জন্য এক অশেষ রহমতের রাত প্রদান করেছেন তা হলো পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। 


এই রাতে মহান আল্লাহ তার রহমতের দরজা খুলে দিয়ে থাকেন। এই রাতে আপনার গুনাহ এর উপর লজ্জিত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে মহান আল্লাহ তা কবুল করে থাকেন। আমাদের উচিত মহান আল্লাহর কাছে সেই সারা বছরের গুনাহ গুলোর জন্য বেশি বেশি কেদেঁ কেদেঁ ক্ষমা চাওয়া।  এতে মহান আল্লাহ খুশি হয়ে থাকেন এবং তিনি যদি চান তো আমাদের জীবনের গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দিবেন।

মহান আল্লাহর কোন অভাব নেই তার মায়ার কোন প্রকার কমতি নেই। তাই তিনি আমাদের নবি (সঃ) কল্যানে এতো বড় একটি ফজিলত পূর্ন রাত  দান করেছেন। আমরা যদি এই রাতে আমাদের সারা বছরের গুনাহ গুলি আল্লাহর কাছে তুলে ধরি এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই তাহলে হইতো আমাদের গুনাহ গুলো কবুল করবেন মহান আল্লাহ।

এই রাত খুবই ফজিলত পুর্ন রাত যার কারনে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন কারিমে বলেছেন। আমাদের মহানবি  (সঃ) এই রাতের জন্য আল্লাহর কাছে যে কতো কেদেছেন তার তুলনা হয়না । তিনি সবসময় চেয়েছেন তার উম্মতের জন্য। আর আমরা তার উম্মত হয়ে নানা ধরনের পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে থাকি তাই চলুন আমাদের অতিতের গুনাহ গুলি মাফ চেয়ে ভালো হয়ে যায়।

এই শবে কদর রাতে আমল করলে কি হয়

শবে কদরের রাতে আমরা যদি আমাদের কৃত গুনাহের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই তাহলে মহান আল্লাহ আমাদের গুনাহ গুলি কবুল করবেন। আমরা যদি খুব বেশি অসহায় হয় বা শত্রুর ভয়ে থাকি তাহলে আমাদের উচিত এই রাতে বেশি বেশি নফল ইবাদত করা এবং আল্লাহর নিকট আশ্রয় পার্থনা করা। নিশ্চয় মহান আল্লাহ অতি দয়ালু তিনি চাইলে পৃথিবী উলটপালট করতে পারেন এমন কেউ নেই যে তিনি ছাড়া আমাদের আর কেউ রক্ষা করতে পারে।

প্রত্যেক বছর রমজান মাস আসে । রোজার প্রথম ১০ দিনকে বলা হয় রহমত তার মানে এই প্রথম ১০ দিনে মহান আল্লাহ আমাদের উপর রহম করেন। আর দ্বিতীয় ১০ দিনকে বলা হয় মাগফেরাত তার মানে হলো এই  আল্লাহ বান্দার প্রতি সহানুভূতি হয়। আর শেষ ১০ দিন কে বলা হয় নাজাত এর মানে হলো এই ১০ দিনে বান্দার গুনাহ গুলো ক্ষমা করেন মহান আল্লাহ । তাই আমাদের এতেকাফ করার প্রয়োজন এই শেষ দশদিনে তার কারন মহানবি (সঃ) এই শেষ দশদিন এতেকাফ করেছেন।

যে আমল গুলো করবেন শবে কদর রাতে

আমরা ইতি পূর্বেই জেনেছি শবে কদর কতটা ফজিলত পূর্ন রাত। তাই আমাদের এই রাতে যে সকল আমল গুলো করা প্রয়োজন তা হলো আপনি যদি কোরআন তেলোয়াত করতে পারেন তাহলে বেশি বেশি এই রাতে পড়তে থাকুন। আর যদি পড়তে না পারেন তাহলে পড়া শিখতে চেষ্টা করুন। আর হ্যা অবশ্যই বেশি বেশি নফল ইবাদত করুন এটা কল্যানকর।


আমরা জানি, গুনাহ আমাদের জীবনে কতটুকু ধ্বংসের কারন। তাই আমাদের জীবনের গুনাহগুলোর ক্ষমা চাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই রাত অতি কল্যানকর একটি রাত তাই আমাদের উচিত সকল কাজ থেকে নিজেকে বিরত রেখে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করা। যদি আপনি আপনার কৃত গোনাহের জন্য ক্ষমা পাওয়ার জন্য ইবাদত বন্দেগী করেন তাহলে মহান আল্লাহ আপনার জীবনের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দিবেন।

শবে কদরের রাতে যে সকল কাজ আমাদের করা উচিত নয়

এই শবে কদর রাত কতটা কল্যানকর রাত আমরা ইতি পূর্বেই বিস্তারিত জেনেছি। তাই আমাদের উচিত এই রাতকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রকার ইবাদত বন্দেগী করা। এবং আমাদের গোনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া। কিন্তু তার পরেও আমরা অবহেলায় কাটিয়ে দেয় এই পবিত্র রাতটি তাই নিচে আমরা কিছু কাজের কথা বলেছি যা আমাদের করা মোটেও উচিত নয়।
  • টিভি,মোবাইল থেকে বিরত থাকুন।
  • অনর্থক কাজে লিপ্ত না হওয়া।
  • মসজিদের বাহিরে ঘোরাফেরা না করা।
  • গান বাজনা থেকে পুরোপুরি বিরত থাকা।
  • বাজারে যাওয়া আসা থেকে বিরত থাকা। 
  • সময় অপচয় না করা।
  • রাতের শেষ অংশ পর্যন্ত না থাকা থেকে বিরত থাকা।
আমরা যদি এই সকল কাজ থেকে বিরত থেকে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করতে পারি তাহলে এটা হবে আমাদের জন্য একটি কল্যানকর রাত। মনে রাখবেন এই রাত আপনি আর পাবেন কিনা তা অবশ্যই আপনি জানেন না। 

পবিত্র শবে কদরের গুরুপ্তপূর্ন কিছু আমল



পবিত্র শবে কদরের গুরুপ্তপূর্ন কিছু আমল রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানি না । চলুন জেনে নেই তা হলো আল্লাহর নিকট বেশি বেশি আপনার চাওয়া পাওয়ার আবেদন জানানো। শবে কদর রাতে মহান আল্লাহ বান্দার অতি নিকটে আসে। তাই আমাদের উচিত আল্লাহ কে রাজী খুশি করা এর জন্য বেশি বেশি উপরে বর্নিত আমল গুলি করা।

মহান আল্লাহ আমাদের ফরিয়াত পছন্দ করে। আমাদের নবি (সঃ) এই রাতে উম্মতের জন্য বহু কেদেছেন যাতে আমাদের গুনাহ মাফ করে। তাই যত বেশি পারেন আল্লাহর আনুগত্য লাভ করুন নিশ্চয় এতে কল্যান রয়েছে।

শেষ কথা

আমি মোঃ শফিকুল ইসলাম একজন মুসলিম। আমিও চেষ্টা করবো এই রাতে বেশি বেশি আমল করার। সেই সাথে আপনারাও চেষ্টা করবেন এই রাতে বেশি বেশি আমল করার । পরিশেষে আজকের এই আর্টিক্যালটি শেষ করছি। খুব শিঘ্রই আবার আসছি নতুন কোন আর্টিক্যাল নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার জন্য দোআ করুন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url