আমাদের বাংলাদেশে বর্তমানে একটি সমস্যা প্রচুর বাড়ছে আর সেটি হলো বেকারত্ব। আমাদের বহু মানুষ আছে যারা অনার্স- মাস্টারস বা বড় বড় ডিগ্রি নিয়েও চাকরি পাচ্ছে না। তারা এতো পরিশ্রম করে এই ২০ - ২৮ বছর পরাশুনা করার পরও বেকার, তার অন্যতম কারন হচ্ছে জনসংখ্যা ।
বাংলাদেশের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি । যার কারনে আমাদের দেশের সরকার চাকরি দিতে পারছে না । একবার ভাবুন সরকার এতো লোককে কিভাবে চাকরি দিবে কিভাবেই বা আমাদের দেশের বেকার সমস্যা সমাধান করবে। তাই এই বেকারত্ব দূর করার একটাই উপায় আছে আর সেটি হলো উদ্যেক্তা হওয়া। আপনি খুব সহজেই নিজের বেকারত্ব দূর করতে পারেন কৃষি কাজ করে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করুন আর লাভবান হোন। আজ আমরা আজকের এই আর্টিক্যালে আপনাদের কে জানাবো কিভাবে আপনি কৃষি কাজের মাধ্যমে আপনার বেকারত্ব দূর করবেন।
বেকারত্ব দূর করুন কৃষির মাধ্যমেপোষ্টসূচিঃ
গ্রীষ্মকালীন ফসল কি কি
গ্রীষ্মকালীন ফসল বলতে আমরা বুঝি গরমের সময় যে ফসল গুলো হয় সেগুলোকে। আমরা জানি বাংলাদেশে প্রচুর গ্রীষ্মকালীন ফসল রয়েছে । তার মধ্যে অন্যতম ফসল গুলো বেগুন, ঢেড়স, মিষ্টিকুমড়া, কাকরোল, করলা এবং পটল । এই সকল সবজি চাষ করে আমাদের বেকার সমস্যা সমাধান করতে পারি এবং একজন উদ্যেক্তা হতে পারি।
সবজি আমাদের লাগবেই এটা নৃত্য প্রয়োজনীয় একটি দ্রব্য। তাই আমরা যারা বেকার রয়েছি ভাবতেছি কি করবো কি করলে এই বেকার অভিশাপ থেকে রক্ষা পাবো তাদের জন্য সুখবর! । আপনি চাইলে আপনার জমিতে এই ফসল গুলো চাষ করে ভালো উপার্জন করতে পারবেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ভাবেন এতো পরাশুনা করে মাঠে কাজ
করবো তাদের বলছি কাজ কাজই আপনি যেই কাজই করুন না কেন আপনার লক্ষ যদি ঠিক থাকে তাহলে আপনি ১০০% সফল হবেন। আপনি হতাশ না হয়ে এই ফসল গুলো চাষ করুন এবং ভালো ভাবে পরিচর্চা করুন দেখবেন আপনি একদিন ভালো একজন উদ্যেক্তা হতে পারবেন তখন মানুষকে আপনি চাকরি বা কাজ দিতে পারবেন চাকরির আশা করতে হবে না।
গ্রীষ্মকালীন ফসলে খরচ কেমন
আপনি যদি গ্রীষ্মকালীন ফসল করে লাভবান হতে চান বা তরুন একজন উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে। এই ফসল গুলো করতে খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। আপনি যদি বানিজ্জীক ভাবে অধিক জমিতে এই ফসল গুলো করতে চান তাহলে আপনার খরচ একটু বেশি হবে। আর যদি আপনি স্বল্প আকারে বা স্বল্প জমিতে করতে চান
তাহলে আপনার খরচ অনেক কম হবে। আমি আপনাকে বলবো আপনি যেহুতু একজন নতুন উদ্যোক্তা হতে চাইতেছেন তাই স্বপ্ল আকারে প্রথম করুন এতে যদি বেশি মুনাফা পান তাহলে পরবর্তীতে আরো বেশি পরিসরে চাষ করুন । বেকার থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে এই ফসল গুলো চাষ করে ভালো ফলন এনে বিক্রি করতে পারলে।
ফসলের রোগ ও প্রতিকার
ফসল উৎপাদন করলেই হবে না আপনাকে ফসলের প্রতি যত্নবান হতে হবে নিয়মিত পরিচর্চা করতে হবে । ফসলের বহু রোগ রয়েছে এবং এর সমাধানও রয়েছে নিচে এগুলো দেওয়া হলোঃ
ফসলের রোগ ঃ
- পচন রোগ।
- শুকিয়ে যাওয়া রোগ।
- পানিশুন্যতা রোগ।
- পোকামাকরের আক্রমন।
- ভাইরাস জনীত রোগ।
- আবহাওয়া জনীত রোগ।
ফসলের রোগ থেকে প্রতিকার ঃ
ফসলের বিভিন্ন ধরনের রোগ আছে । এই রোগ গুলো থেকে কিভাবে রক্ষা করতে পারি আমাদের ফসল তা আমরা অনেকেই জানি না। আমাদের ভুলেই কারনেই আমাদের ফসল গুলোর রোগ হয়ে থাকে তার কারন আমরা ঠিক ভাবে ফসলের পরিচর্চা করতে পারি না। আমরা যদি নিয়মিত আমাদের ফসল গুলোর পরিচর্চা করতে পারি তাহলেই আমাদের এই সকল রোগ থেকে ফসল কে রক্ষা করতে পারবো। এছাড়াও যদি আমাদের ফসলের জটিল কোন রোগ হয় তাহলে আমাদের উচিত কোন ভালো কোন উদ্ভিদ চিকিৎসকের নিকট পরামর্শ নেওয়া এই চিকিৎসক গুলো আপনি আপনার নিকটস্থ উপজেলায় বা ইউনিয়নে পেয়ে যাবেন।
মুরগির খামার
আপনি মুরগির খামার করে আপনার বেকার সমস্যা সমাধান করতে পারেন। মুরগির চাহিদা বাংলাদেশে প্রচুর রয়েছে যার কারনে আমাদের দেশের উদ্যেক্তারা সামাল দিতে পারছেন না। তাই এই ব্যবসা লাভজনক একটি ব্যাবসা তেমন কোন পরিশ্রমও নেই । আপনি যদি একজন বেকার যুবক হয়ে থাকেন তাহলে এই ব্যবসাটা আপনার জন্য দারুন হবে।
বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচুর বেকার ভাইয়েরা রয়েছেন যারা বুঝতে পারছেন না কি করবেন তাই আমি আপনাদের সাজেশন দিবো আপনি মুরগির খামার করুন । শুরুতে বেশি করার দরকার নেই আপনি অল্প পরিসরে শুরু করুন এবং আস্তে আস্তে আপনার খামার বৃদ্ধি করুন। এতে আপনার তেমন কোন খরচ লাগবে না মোটা মোটি আপনার কাছে যদি
১ লক্ষ টাকা থাকে তাহলে আপনি এই ব্যবসা করতে পারেন। এটিতে তেমন কোন লোকসান নেই । তবে আপনাকে নিয়মিত মুরগির যত্ন নিতে হবে । মুরগির বহু জাত রয়েছে আমাদের দেশে ব্রয়লার মুরগি অনেক জনপ্রিয় আপনি চাইলে ব্রয়লার মুরগির খামার দিতে পারেন।
মাছ চাষ
আপনার বেকারত্ব দূর করার আরেকটি মাধ্যম হলো মৎস চাষ বা মাছ চাষ। আপনি খুব সহজেই এই ব্যবসাটি করতে পারেন এতে কোন বেশি পরিমানের টাকার প্রয়োজন নেই । আপনি চাই যে কোন একটি পুকুরে এই মাছ চাষ করতে পারেন। আপনি শুরুতে অল্প পরিসরে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে এটি সম্প্রসারন করতে পারেন।
মাছের চাহিদা বাংলাদেশে প্রচুর রয়েছে তাই চাকরির পিছনে না ছুটে আপনি এই ব্যবসা করে একজন উদ্যোক্তা হতে পারেন। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা যা কৃষি কাজের অন্তর্ভুক্ত। এই কাজে তেমন কোন ভারি পরিশ্রম প্রয়োজন নেই আপনি চাইলে এই পন্ত্রা অবলম্বন করে বাড়তি আয় করতে পারেন । এই ব্যবসায় লাভের হার সবচেয়ে বেশি যা আপনি দ্রুত সফল হতে পারেন।
আমরা জানি আমাদের বাংলাদেশে কি পরিমান মাছের চাহিদা রয়েছে এটি দিন দিন কিন্তু বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে তাই এই ব্যাবসাটি আপনার জন্য উন্মুক্ত । আপনি এই ব্যবসাটি করলে বেকার সমস্যা দূর করতে পারবেন অনায়সেই । এই ব্যাবসায় লস তখনি হবে যখন আপনি এর সঠিক পরিচর্চা করতে পারবেন না। হ্যা আপনি যদি সঠিক ভাবে এই মৎস চাষ করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি লাভবান হবেন।
তরমুজ চাষ
আপনি চাইলে তরমুজ চাষ করে ভালো পরিমানে অর্থ মুনাফা করতে পারবেন। আমরা বাংলাদেশে কি পরিমান তরমুজের চাহিদা রয়েছে। এটি একটি অতি লাভজনক ফসল তার কারন আপনি যদি এই মুহুর্তে বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত হোক না কেন সেখান থেকে তরমুজ কিনতে যান তাহলে আপনাকে গুনতে হবে মোটা অংকের টাকা ।
একটি তরমুজ ৫০০ -৯০০ টাকা হয়ে থাকে। তার কারন তরমুজ কেজি দরে বিক্রি হয় তাই এই ফসল টি যদি আপনি ৫ কাঠা জমিতে করতে পারেন তাহলে আপনার বিপুল পরিমান অর্থ লাভ হয়ে যাবে। এটি একটি অর্থকরি ফসল । তবে আপনাকে কৃষি অফিস থেকে বিজ নিতে হবে এবং কৃষি অফিসারদের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
তারা আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। তবে আপনাকে পরিচর্চা করতে হবে এবং সঠিক ভাবে তরমুজ রোপন সহ বিভিন্ন দিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। সাধারণত তরমুজের চাহিদা বেশি থাকার জন্য ব্যবসায়িরা বা কৃষকরা এতে বিভিন্ন মেডিসিন বা ক্যামিক্যাল ব্যাবহার করে তরমুজের আকার বড় করে এতে সাধারন ভোক্তা বা ক্রেতার অনেক রকম সমস্য তৈরী করে তাই এগুলো করা যাবে না।
আপনি যদি একজন সফল উদ্যেক্তা হতে চান তাহলে ভেজাল জিনিসের দিকে না যাওয়ার জন্য আপনাকে পরামর্শ দিবো। নিশ্চয় তরমুজ একটি ভালো ফল বিভিন্ন প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করে এটি নষ্ট করবেন না। আপনি যদি সকল গাইডলাইন মেনে তরমুজ চাষ করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনি অনেক ভালো ফলন পাবেন এবং এটি আপনার বেকার সমস্যা দুর করবে ইনশাআল্লাহ।
কলা চাষ
বাংলাদেশের আরেকটি অর্থকরি ফসল হলো কলা । কলা বারো মাসই পাওয়া যায় এতে প্রকার কলা হয়। কলার চাহিদা মোটেও কম নয় কলা চাষের লাভ অনেক বেশি হয়ে থাকে । আপনি যদি একজন বেকার হয়ে থাকেন তাহলে এই কলা আপনি চাষ করতে পারেন নিঃসন্দেহে। কলার বহু জাত রয়েছে এগুলোর মধ্যে অন্যতম জাতের নাম হলো সারুফ কলা ।
এই কলা চাষে আপনি বিভিন্ন প্রকার পন্ত্রা অবলম্বন করে বিপুল পরিমান লাভ করতে পারেন। যদি আপনি ৫০০ কলার চারা রোপন বা লাগাতে পারেন আপনার জমিতে তাহলে প্রতি সরি আপনি বিক্রি করতে পারেন ৫০০ টাকায়। তাহলে হিসাব করুন কি পরিমান লাভ আপনি করতে পারবেন।
কলা চাষের জন্য জমির কোন ভেদাভেদ নেই সার প্রয়োগ করলেই যেকোন জমিতে কলার ফলন ভালো পাওয়া যায়। কলার পাশাপাশি আপনি চাইলে নিচে যেকোন একটি ভালো ফসল রোপন করতে পারেন যেমনঃ শাক সবজি ইত্যাদি । তাই আপনি কলা চাষে ২ টি ফসল একসাথে করতে পারবেন । এই ফসল গুলোর চাহিদা বেপক তাই আপনি খুব সহজেই কলা চাষ করে আপনার বেকার সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
শেষ কথা
আমরা আজকের এই আর্টিক্যালে কৃষি কাজ বেকারত্ব দূর করে - ফসল উৎপাদন করুন লাভবান হোন। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি বেকার হয়ে থাকলে এখান থেকে যেকোন একটি ফসল উৎপাদন করে আপনার বেকার সমস্যা দূর করতে পারবেন। শেষ করছি আজকের এই আর্টিক্যাল সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং আমাদের সাথেই থাকবেন দেখা হচ্ছে পরের কোন নতুন আর্টিক্যালে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url