বিচি কলা খাওয়ার কার্যকরী ২৪ টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

 আপনি যদি বিচি কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিক্যালটি আপনার জন্যই। আপনি আজকের এই আর্টিক্যালটি পড়লে জানতে পারবেন বিচি কলা খাওয়ার ২৪ টি উপকারিতা সম্পর্কে এবং বিচি কলা খাওয়ার নিয়মও জানতে পাড়বেন। 


আমরা জানি কলার মধ্য বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে এর মধ্য অন্যতম একটি কলা হলো বিচি কলা। আমরা বিচি কলা চিনলেও অনেকে খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জানি না তাই আজ আমরা বিচি কলা খাওয়ার কার্যকরী ২৪ টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

সূচিপত্রঃ বিচি কলা যেভাবে খাবেনপোষ্টসূচিঃ

বিচি কলার মধ্য উপকারিতা

আমরা বিচি কলার খাওয়ার নিয়ম জানার আগে বিচি কলার মধ্য কি কি উপকারিতা আছে তা জানবো। আমরা জানি কলার বহু জাত বা প্রকারভেদ রয়েছে এগুলোর মধ্য অন্যতম হলো বিচি কলা। সাধারণত এই কলায় বড় বড় বিচি থাকে যার কারনে এই কলার নাম দেওয়া হয় বিচি কলা ।

আমরা জানি প্রায় সব কলাতেই সাস্থকর পুষ্টি উপাদান থাকে। তবে এই বিচি কলায় একটু ভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান থাকে ব্যপারটা এরকম নয়। তবে বিচি কলা বিভিন্ন ঔষধে ব্যবহৃত হয়। তাই এই কলার কার্যকারিতা একটু বেশি। নিচে আমরা আরো জানবো।

 যদি আমরা বিচি কলা রান্না করে খেতে পারি তাহলে এটি আমাদের শরিরের বিভিন্ন রোগ নিরাময় করতে পারে। নিচে কিছু রোগের কথা বলা হলো যা বিচি কলা খেয়ে নিরাময় করা সম্ভব।
  • ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রন করে।
  • বিচি কলার গাছের রস কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করে।
  • জ্বর ও রক্তক্ষরন বন্ধ করতে কার্যকরি ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • ছত্রাক জনিত রোগ নিয়ন্ত্রন করে।
  • গ্যাস্টিক জনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রনে আনে।
  • আলসার রোগের সমস্যা দূর করতে কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।
  • কিডনিতে সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
  • মলদার সমস্যা নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে।
  • কৃমি জনিত সমস্যা দূর করে।
  • কিডনিতে পাথর হয়ে গেলে সেটি নিয়ন্ত্রনে আনসে সহায়তা করে।

উপরে কিছু রোগের কথা বলা হলো । বিচি কলা খেলে এই রোগ গুলো থেকে এড়িয়ে চলা যায় এবং যাদের ইতিমধ্য রোগ গুলি হয়েছে তাদের জন্যও কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।

বিচি কলা খাওয়ার উপকারিতা

আমরা যারা বিচি কলা খাওয়ার উপকারিতা জানি না তাদের জন্য এখন আলোচনা করবো বিচি কলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি । বিচি কলা সাধারণত ঔষধি গুনাগুন সম্পুর্ন একটি ফল যা আমাদের দেহের অনেক রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।


আমরা যদি নিয়মিত ১টি অথবা ২টি বিচি কলা খেতে পারি তাহলে আমাদের অনেক রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করবে। যেমনঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিয়ন্ত্রন, কৃমি জনিত সমস্যা সহ আরো অনেক রোগের কাজ করে থাকে।

তাই আমরা এই বিচি কলাকে অন্যান্য কলা থেকে কিছুটা আলাদা বলেছি। আমরা জানি বিচি কলাতে থাকে প্রচুর পুষ্টি উপাদান । যা আমাদের শরির বা স্বাস্থ্যর জন্য অধিক উপকারি শুধু তাই নয় বিচি কলা আমাদের প্রচুর এনার্জী দেয় যা অন্য প্রজাতির কলায় পাওয়া যায় না।

বিচি কলা খাওয়ার নিয়ম

বন্ধুরা আমরা ইতিমধ্যই জেনেছি বিচি কলা খাওয়ার ২৪ টি উপকারিতা সম্পর্কে। তাই আমরা এখন জানবো বিচি কলা খাওয়ার নিয়ম সম্বন্ধে তো চলুন শুরু করা যাক। বাংলাদেশে প্রচুর কলা রয়েছে রয়েছে তাই এদের জাত বা প্রজাতি আলাদা হয়ে থাকে। যেমনঃ সাগর কলা, তুলাডি কলা ইত্যাদি।

প্রত্যেকটা জিনিস খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে যা আমাদের মানা অত্যন্ত জরুরি। তার কারন আমরা যদি নিয়ম মেনে খাবার না খাই তাহলে আমাদের উপকারের চাইতে অপকার বেশি হয়। তাই কলা খাওয়ার ও বেশ কিছু নিয়ম আছে তা হলো যদি বিচি কলা গাছ পাকা থাকে তাহলে এমনি এমনি খেতে পারেন।

আর যদি বিচি কলা পাকা না থাকা তাহলে রান্না করে খেতে পারেন । তবে মনে রাখবেন একসাথে অনেক গুলো কলা খাবেন না, দিনে ১-২ টি কলা খেতে পারেন । তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি প্রতিদিন সকালের নাস্তা সাথে খেতে পারেন এতে আপনার রুটিন ও ঠিক থাকবে এবং বিচি কলা খাওয়ার উপকারিতাও পাওয়া যাবে।

বিচি কলার বিচি খেলে করনীয়

অনেকেরই প্রশ্ন কলা খাওয়ার সাথে যদি বিচি খেয়ে ফেলি তাহলে কি হবে ? আবার অনেকেই টেনশন করি বিচি খেলে কোন সমস্যা হবে নাতো  ?  উত্তর হচ্ছে বিচি কলার বিচি খেলে কোন সমস্যা হবে না বরং আরো উপকার হবে তার কারন কলার বিচিতে থাকে প্রচুর শর্করা উপাদান যা আমাদের শরিরের

জন্য অনেক কার্যকরি ভুমিকা পালন করে । তাই আমাদের উচিত কলা খাওয়ার সময় কলার সাথে বিচি গুলো খেয়ে ফেলা এতে আমাদের আরো বেশি উপকার হবে। আমরা অনেকেই কলা খাই ঠিকই কিন্তু  কলার বিচি খাইনা বা ফেলে দেই । 

এটা আমাদের মুটেও করা উচিত নয় । তার কারন কলায় যেমন পুষ্টি উপাদান থাকে ঠিক তেমনি কলার বিচিতেও বহু শর্করা উপাদান থাকে যা আমাদের দেহের জন্য কার্যকরি ভুমিকা পালন করে।

আটিয়া কলা খাওয়ার উপকারিতা

আমরা এতক্ষন বিচি কলা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম আশা করি বুঝতে পারছেন। তাই এখন আমরা অন্য প্রজাতির কলা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করবো । আটিয়া কলা এক ধরনের পুষ্টিকর কলা এই কলাতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি আরও রয়েছে শর্করা তাই আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য খুবই ভালো।

এই কলারও কিছু উপকারিতা রয়েছে নিচে দেওয়া হলোঃ
  • আটিয়া কলা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • এর মধ্য রয়েছে পটাশিয়াম যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে।
  • শারিরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • আটিয়া কলা আমাদের টিস্যু গঠনে প্রচুর ভুমিকা পালন করে।
  • আটিয়া কলা ডায়াবেটিস রোগ কন্ট্রলে রাখতে সাহায্য করে।
  • আটিয়া কলা গ্যাস্টিক রোগের জন্য কার্যকরি ভুমিকা পালন করে।

গর্ভাবস্থায় বিচি কলা খাওয়া যাবে ?

আপনি যদি না জেনে থাকেন গর্ভাবস্থায় বিচি কলা খাওয়া যাবে কি না তাহলে জেনে নিন। অনেক মায়েরাই গর্ভধারনের পর বিচি কলা খেতে চাই না তার কারন এটি ঠান্ডা ফল। আপনাদের কে জানিয়ে রাখি এটি একটি পুষ্টিকর ফল যার অনেক গুনাগুন রয়েছে। তবে কিছু শর্ত আছে তা নিচে দেওয়া হলো ঃ
  • বিচি কলার মধ্য রয়েছে পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি যা গর্ভবতী মা বোনদের জন্য উপকারি একটি ফল।
  • গর্ভবতী মায়েদের পেট ভালো রাখার জন্য কার্যকরি ভুমিকা পালন করে বিচি কলা তাই বলা যায় গর্ভবতী মা বোনদের জন্য এটা অসাধারন একটি ফল।
  • কোন গর্ভবতী মায়ের যদি কোষ্টকাঠিন্য রোগ থাকে তাহলে সেই গর্ভবতী মায়ের জন্য এটা প্রচুর ভুমিকা পালন করবে কোষ্টকাঠিন্য রোগ দূর করার জন্য।
  • আমাদের শরির সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ক্যালরি যা বিচি কলার মধ্য রয়েছে।
  • যদি কোন গর্ভবতী মায়ের গ্যাস্টিক সমস্যা থাকে তাহলেও প্রচুর কাজ করবে এই বিচি কলা।

সবরি কলা খাওয়ার উপকারিতা

আগেই বলেছি কলা আমাদের মানবদেহের জন্য কতটা গুরুপ্তপুর্ন। আমরা আরো জেনেছি কলার অনেক গুলো জাত রয়েছে তার মধ্য আরেকটি জাত হলো সবরি কলা । সবরি কলাতে রয়েছে ভিটামিন,ক্যালসিয়াম ও পটাশ যা আমাদের দেহ সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।


আমরা আরও জেনেছি কলা আমাদের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সহযোগিতা করবে। তার মধ্য অন্যতম কলা হলো সবরি বিচি কলা এই কলা খেলে গ্যাস্টিক,আলসার,ডায়াবেটিস সহ আরো অনেক রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।

সাগর কলা খাওয়ার উপকারিতা

সাগর কলাতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশ যা আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে বাচতে ও নির্মুল করতে সহায়তা করে। আমরা জানি কলার অনেক জাত রয়েছে তার মধ্য আরেকটি জাত হলো সাগর কলা যা বাজারে প্রচুর পাওয়া যায়। এই কলার কিছু কার্যকরি উপকারিতা রয়েছে।

তা হলো সাগর কলা হৃদরোগের ঝুকি কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখে ইত্যাদি। অনেকেই মনে করেন এই সাগর কলা খেলে মোটা হয়ে যাবে । সত্তি কথা হলো এটা সম্পুর্ন ভুল ধারনা তার কারন সাগর কলাতে খুব কম ক্যালরি থাকে যা আমাদের কখনই মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

সাগর কলা প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং এই কলার দামও হাতের নাগালে যা সবাই অতিরিক্ত কিনতে পারে।  তাই এই কলা বাংলাদেশে প্রচুর চাষ করা হয় এটি একটি লাভজনক ফসল এই নিয়ে একটি আর্টিক্যাল দিবো খুব শিঘ্রই ইনশাআল্লাহ।

চাপা কলা খাওয়ার উপকারিতা

একেক জেলায় একেক নামে চিনে এই কলাকে আমাদের জেলায় এই কলাকে আমরা চাপা কলা বলে। চাপা কলাতেও প্রচুর ভিটামিন ও পটাসিয়াম সহ বিভিন্ন কার্যকরি উপাদান রয়েছে।
  • কলা হলো একটি পুষ্টিকর ফল যা আমাদের হার্ট রোগিদের জন্য কার্যকরি ভুমিকা পালন করে।
  • আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকতে সহায়তা করবে।
  • কলা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ।
  • কলাতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে যদি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে ভিটামিনের অভাব দূর করবে।
  • যাদের এলার্জি রোগ আছে তাদের জন্য ভালো একটি ফল হলো চাপা কলা । এই কলা আপনার এলার্জি নিয়ন্ত্রন করবে।

পরিশেষে

আমরা আজকের আর্টিক্যালে বিচি কলা খাওয়ার কার্যকরী ২৪ টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করলাম আশা করি বুঝতে পারছেন। কলার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে যার ২৪ টি উপকারিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ মনে রাখবেন ফরমালিন যুক্ত কলা খেলে উপকারের থেকে অপকার বেশি হয় তাই কলা খাওয়ার আগে ফরমালিন আছে কিনা চেক করে খান। আজ এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url